সমস্ত প্রমাণাদি প্রস্তুত, লড়াই চালিয়ে যাবেন নিপুণরা

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জায়েদ খান। তার বিরুদ্ধে আলোচনা-সমালোচনা শেষ নেই। জল্পনা-কল্পানার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন শেষ হয় গত ২৮ জানুয়ারি। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৪২৮ জন।
এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৩৬৫ জন। শতকরা হিসেবে ভোট পড়ে ৮৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয় ২৯ তারিখ। ফলাফল ঘোষণা নিয়েও রয়েছে নানা রকমের বির্তকির্ত মন্তব্য। নির্বাচন কমিশানর পীরজাদা হারুণ অর রশিদ ছিলেনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তার বিরুদ্ধে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণকে ভোটের দিন চুমু খাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।
জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জায়েদ খান শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার জয়ী হওয়ার বিষয়ে বিরোধীতা করে আপিল বোর্ডের কাছে অভিযোগ করেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ।
শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) আপিল বোর্ড জায়েদ খানের প্রার্থীতা বাতিল করে নিপুণকে জয়ী ঘোষণা করেন। এরই মধ্যে শপথ নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন নিপুণ। কিন্তু বিধিবাম! একদিন না যেতেই স্থগিত করা হলো নিপুণের পদটি। জায়েদের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে এক সপ্তাহের রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ মামলায় বিবাদীর তালিকায় আটজন আছেন বলে জানান জায়েদ খানের আইনজীবী নাহিদ সুলতানা। বাদীরা হলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সোহানুর রহমান সোহান, মোহাম্মদ হোসেন, নিপুণ আকতার, মোহাম্মদ হোসেন জেমীসহ আটজন।
এদিকে এই আদেশের বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমাণাদি নিয়ে আইনি লড়াই চালাবেন বলে জানিয়েছেন বিবাদীরা। তাঁরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল থেকে বিজয়ী সাইমন সাদিক বলেন, ‘এখনই কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না। এতটুকুই বলি, আইনি লড়াই চালিয়ে যাব আমরা। এখন রায়ের কাগজপত্র হাতে পেলে, আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন আমাদের প্যানেলের সবাই।’
সোমবার বিকেলে নিপুণের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করা হবে। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে মঙ্গলবার আবেদন শুনানির জন্য দাখিল করা হবে। তা না হলে আবেদনটি বুধবার চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
এই রিটের অন্যতম বিবাদী আপিল বোর্ডের এক সদস্য মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘এ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার আছে। জায়েদ খান মহামান্য হায়কোর্টে রিট করেছিলেন। হাইকোর্ট রায় স্থগিত করছেন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমরা।’
এখন আপনারা কী করবেন, জানতে চাইলে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও আপিল বোর্ডের এই সদস্য বলেন, ‘বাদীর আইনজীবী এটি ভালো বলতে পারবেন। আমাদের আইনজীবী এই রায়ের কাগজপত্র তুলবেন। এরপর তা দেখবেন, কীভাবে এই রায়ের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে লড়া যায়। এর বেশি এখন আর কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে আশা করছি, ন্যায়বিচার পাব আমরা।’
এ ব্যাপারে জায়েদ খান বলেন, ‘আইনের আশ্রয় তাঁরা নিতেই পারেন। তবে আজকের এ রায়ের বিরুদ্ধে আর কিছু করার সুযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না। নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট অন্য মামলা করে আইনি লড়াই চালাতে পারেন তাঁরা।’
তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ আমার পক্ষে এসেছে। আমি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। মহামান্য হাইকোর্টও আমার পক্ষে আদেশ দিলেন।’