Uncategorized

যত্ন নিলে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হতে পারে সিরাজগঞ্জের সাড়ে তিনশতবর্ষী বটগাছ

একটি বটগাছ। একটি ইতিহাস। সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের সরাইদহ চরপাড়া গ্রামে প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমি জুড়ে বিস্তৃত একটি বটগাছ কালের সাক্ষী হয়ে প্রায় চারশত বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে। এ গাছটির শাখা, প্রশাখা ডালপালা মাটির সঙ্গে তৈরি করেছে এক আঙ্গিক সম্পর্ক, শীতল ছায়া আর পাখির কলকাকলি। সেইসঙ্গে সবুজ শ্যামল এই বটগাছের নিচে যে কেউ এসে বসলে মনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। পথচারী ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে এর অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। তাই এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এক নজর দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে দর্শনার্থীরা।

ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের রায়গঞ্জ উপজেলার ভূঞাগাঁতী বাসস্ট্যান্ড থেকে একটু উত্তরে এগুলেই চোখে পড়বে বিশাল আকৃতির এই গাছটি। স্থানীয় লোকজনের মতে প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমির ওপর বিস্তৃত বটগাছটি অন্তত সাড়ে তিনশত বছরের পুরোনো। বৃক্ষটির ছড়িয়ে থাকা একেকটি শাখা-প্রশাখা দেখলেই মনে হয় পরম মমতায় বাড়িয়ে দেয়া হাত। শিশুদের জন্য এ বটগাছটি প্রধান খেলার জায়গা। সুযোগ পেলেই তারা দলবদ্ধভাবে গাছের নিচে খেলাধুলায় মেতে উঠে। আগে বটতলায় অনেক সাধু-সন্ন্যাসী ধ্যানে মগ্ন হতেন। এখন তাদের দেখা না মিললেও হিন্দু-মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষই গাছটি দেখতে আসেন। অনেকে আবার মানত পূরণ করার জন্য আসেন।

শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয় পুরানো প্রাচীন বটতলায় প্রতিবছর জৈষ্ঠ মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার চরপাড়া মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকা জুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। প্রতিটি বাড়িতে অতিথির আগমন ঘটে। মেলায় হিন্দু ও মুসলিমসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। মেলাতে থাকে বিভিন্ন রকম খাবার ও খেলার আয়োজন। নাগরদোলা, লাঠিখেলা ও ছুড়িখেলাসহ বিভিন্ন খেলায় মেতে ওঠে মেলায় আগত মানুষেরা।

প্রাচীন বটগাছটিকে নিয়ে প্রচলিত আজব সব কথাবার্তা শোনা যায়। বটগাছের পাতা বা ডালপালা জ্বালানি হিসেবে কেউ ব্যবহার করলে তার গায়ে জ্বর আসে। কথিত আছে, এ গাছের নিচে প্রসাব বা মলত্যাগ করলে তারা নানা রকম অসুখে আক্রান্ত হন।

রাস্তা কাঁচা হওয়ায় কিছুটা অসুবিধায় পড়তে হয় গাছটি দেখতে আসা দর্শনার্থীদের। স্থানীয়দের দাবি রাস্তা পাকাকরণসহ বটগাছটির সৌন্দর্য বর্ধনে উন্নয়নমূলক কাজ করলে এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হয়ে উঠতে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button