
রাজিব আহমেদ রাসেল, স্টাফ রিপোর্টাির: দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র ও ক্লাসের সেরা ছাত্র ছিল সুমন (১৫)। টগবগে চঞ্চল কিশোর পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও পারদর্শী ছিল সে। কিন্তু হঠাৎ সহপাঠীদের হামলায় আহত হয়ে ১০ দিন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকার পর বুধবার রাত ১০টায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমায় সুমন।
সুমন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল গ্রামের দরিদ্র সুলতান প্রামাণিকের ছেলে ও বেলতৈল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র।
নিহত সুমনের চাচা মোঃ রজব আলী জানান, গত ১২ জুন রবিবার বিদ্যালয়ের অর্ধ বার্ষিকী পরিক্ষার সময় তার সহপাঠী ২/৩ জন ছাত্র তার খাতা দেখতে চাইলে সুমন খাতা দেখাতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে পরিক্ষা শেষে বাইসাইকেল যোগে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে তার সহপাঠী রাকিব, রতন ও নাছিরের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন বখাটে সুমনের পথরোধ করে।
পরে তারা সুমনের উপর হামলা চালায়, এসময় হামলাকারীরা লাঠি সোটার আঘাত ও কিলঘুষি মারতে থাকে। পরে অন্যান্য সহপাঠীরা ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন সুমনকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।
সেখানে সুমনের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, সেখানে সুমনের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বগুড়া শহিদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। গত ১৮ জুন সুমনকে বগুড়া শহিদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে ৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বুধবার (২২ জুন) সুমন মারা যায়। তার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
সুমনের সহপাঠী ও প্রতিবেশীরা জানায়, সে অনেক মেধাবী ছাত্র ছিল। দরিদ্র পিতার একমাত্র অবলম্বন ছিল, তার মৃত্যুর সাথে একটি পরিবারেরওঢক মৃত্যু হলো। তারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এই বিষয়ে শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, স্কুলছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা জানার পর শজিমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কে ময়নাতদন্তের জন্য জানানো হয়েছে। স্কুলছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আমরা নিয়মিত হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করবো।